বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। আলহামদুলিল্লাহ, দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। আমরা নামাজ পড়ি কিন্তু সবাই নামাজের ফরজ কয়টি এবং নামাজের ওয়াজিব কয়টি এগুলো জানিনা ,জানলেও মনে নেয়। নামাজের ওয়াজিব কাজ বলতে ঐ সব কাজকে বুঝায়, যার কোনো একটিও ওয়াজিব ভুলবশত ছুটে গেলে সিজদায়ে সাহু আদায় করতে হয়। তবে ইচ্ছাকৃত ওয়াজিব তরক করলে নামাজ পুনরায় পড়তে হবে। যদি সিজদায়ে সাহু আদায় করতে ভুলে জান তাহলে পুনরায় নামাজ পড়তে হবে। তাই নামাজের ওয়াজিবগুলো যথাযথ ভাবে আদায় করতে হবে।
সাহু সেজদা করার নিয়ম:
নামাজের শেষ বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়ার পর ডান দিকে সালাম ফিরাবে। তারপর দুটি সিজদা দেবে অতঃপর আত্তাহিয়্যাতু, দরুদ শরীফ ও দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফিরাবে।
আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে জানব নামাজের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি ?
নামাজের ওয়াজিব ১৪টি এগুলো কি কি এখানে তুলে ধরা হলো।
১. প্রথম সূরা ফাতিহা পাঠ করা এবং সম্পূর্ণ পড়া। (বুখারি ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৭২০ – আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৭৫৬)
২. সুরা ফাতিহার সাথে অন্য একটি সূরা মিলানো বা (কমপক্ষে তিন আয়াত অথবা তিন আয়াতের সমান এক আয়াত পরিমাণ তিলাওয়াত করা)।
(বুখারি ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৭৪০ – আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৭৭৬, মুসলিম ১/১৮৫, হাদিস : ৪৫১)
৩. রুকু ও সেজদায় দেরী করা।
( বুখারি ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৭৫৭ -আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৭৯৩, মুসলিম ১/১৭০, হাদিস : ৩৯৭, আবু দাউদ ১/১২৪, ১২৪, হাদিস : ৮৫৬, ৮৫৭, ৮৫৮)
৪. রুকু হতে সোজা হয়ে দাড়িয়ে দেরী করা। (অর্থাৎ কমপক্ষে এক তাসবিহ পরিমাণ দেরি করা)।
( বুখারি ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৭৫৭ -আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৭৯৩, মুসলিম ১/১৭০, হাদিস : ৩৯৭, আবু দাউদ ১/১২৪, ১২৪, হাদিস : ৮৫৬, ৮৫৭, ৮৫৮)
৫. দুই সেজদার মাঝখানে সোজা হয়ে বসে দেরী করা।
(অর্থাৎ কমপক্ষে এক তাসবিহ পরিমাণ দেরি করা)।
( বুখারি ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৭৫৭ -আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৭৯৩, মুসলিম ১/১৭০, হাদিস : ৩৯৭, আবু দাউদ ১/১২৪, ১২৪, হাদিস : ৮৫৬, ৮৫৭, ৮৫৮)
৬. দরমিয়ানী বৈঠক (অর্থাৎ তিন অথবা চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজ হলে, প্রথম দুই রাকাআতের পর বসা)।
(বুখারি ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৭৯০, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৮২৮)
আরও পড়ুন : তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত ওয়াক্ত ও ফজিলত এবং অন্যান্য বিষয়
৭. উভয় বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পাঠ করা। (অর্থাৎ তিন অথবা চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজের দোন বৈঠকে আত্তাহিয়াতু পড়া ) ( বুখারি ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৭৯২, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৮৩০, ৮৩১, মুসলিম ১/১৯৪, ১৭৩, হাদিস : ৪৯৮, ৪০২, ৪০৩, তিরমিজি ১/৮৯, হাদিস : ৩৯১)
৮. ইমামের জন্য যে সব নামাজ কেরাত আস্তে পড়তে হয় সেখানে কেরাত আস্তে পড়া। আর যেখানে কেরাত জোরে পড়তে হয় জোরে পড়া। (অর্থাৎ ফজর মাগরিব এশার নামাজে কেরাত জোরে পড়তে হবে। আর যোহর ও আসরের নামাজে কেরাত আস্তে পড়া ওয়াজিব। (মনে রাখতে হবে, আস্তে পড়ার অর্থ মনে মনে পড়া নয়। বরং আওয়াজ না করে মুখে উচ্চারণ করে পড়া )। (মুসলিম হাদিস একাডেমি নাম্বারঃ ৯৬৯- আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৯৭০,
৯. বিতির নামাজে তৃতীয় রাকাতে কিরাআতের পর দোয়ায়ে কুনুত পাঠ করা।
(বুখারি ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৯৪৮ – আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১০০২, তিরমিজি ১/১০৬, হাদিস : ৪৬৪১ হাসান, ইবনে মাজাহ ১/৮৩, হাদিস : ১১৮২)
১০. দুই ঈদের নামাজে ছয় ছয় তাকবীর বলা। (আবু দাউদ ১/১৬৩, হাদিস : ১১৫৩ হাসান, মুসনাদে আহমাদ ৪/৪১৬, হাদিস : ১৯৭৩৪ হাসান )
১১. প্রত্যেক ফরয নামাযের প্রথম দু’রাকাআ’তকে কেরাতের জন্য নির্ধারিত করা।
(বুখারি ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৭৪০- আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৭৭৬, মুসলিম ১/১৮৫, হাদিস : ৪৫১)
১২. প্রত্যেক রাকাআতের ফরযগুলোর তারতীব ঠিক রাখা।
(বুখারি ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৫৮১৭ – আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৬২৫১)
১৩. প্রত্যেক রাকাতের ওয়াজিব গুলাের তারতীব ঠিক রাখা। (বুখারি ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৫৮১৭ – আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৬২৫১)
১৪. সালামের দ্বারা নামায শেষ করা। ( বুখারি ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৭৯৮, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৮৩৭ )
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে নামাজের ওয়াজিব কয়টি এবং কি কি বিষয়গুলো জেনে বুঝে যথাযথ ভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ প্রত্যকে মুসলমানকে নামাজি হিসেবে কবুল করুন। আমিন।
পোষ্টি যদি আপনার কাছে ভালো লাগে তাহলে শেয়ার এবং কমেন্ট করুন।
Leave a Reply