রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যদিও সফরে তোমাদের বাহন ছুঠে যায় যাক তবু এই দুই রাকাত ছাড়বেনা । ফজরের দুই রাকাআত সুন্নাত দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়ে উত্তম (মুসলিম : ৭২৫)। পৃথিবীর যত সুন্নাত ও নফল নামাজ আছে তার মধ্যে ফজরের দুই রাকাত সুন্নাত হল সব ছেয়ে গুরুতপূর্ণ। ফজরের সুন্নাত ছুটে গেলে কি আদায় করতে হবে, আদায় করতে হবে। কারণ ফজর,জোহর,আসর,মাগরিব,এশা ফরজ এবং ওয়াজিব নামাজের পরে গুরুতপূর্ণ নামাজ হল ফজরের আগে দুই রাকাত সুন্নাত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো এটা ছাড়তেন না। তাই যথাসম্ভব ফজরের সুন্নাত আদায় করা উচিৎ ৷
এমনকি জামাআত শুরু হয়ে গেলেও যদি ইমাম সাহেবের সাথে অন্তত এক রাকাআত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলেও আগে সুন্নাত পড়ে নেওয়া উচিত। তবে এক্ষেত্রে ফজরের সুন্নত নামাজ পড়তে গিয়ে যদি জামাত ছুটে যাওয়া সবব্ভনা আছে, সে ক্ষেত্রে আগে জামাতে ফরজ আদায় করতে হবে। যদি জামাতের আগে ফজরের সুন্নাত পড়তে না পারলে সে ক্ষেত্রে সুন্নাত নামায টা পরেই পড়ে নিতে হয়।
আরও পড়ুনঃ ফজরের নামাজের উত্তম সময়
হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা:) তিনি বলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে আমি শুনেছি যে ফযরের নামাজের পর কোন নামায নেই যতক্ষন না সূর্য উদয় হয়। (বোখারী শরীফ হাদীস নং ৫৮৬)
ফজরের সুন্নাত ছুটে গেলে কখন আদায় করতে হবে? এই প্রশ্নে ইসলামিক স্কলারদের মধ্যে দুইটি মত রয়েছে । ইসলামিক স্কলারদের একটা অংশ বলেন পড়া যাবে আরেক অংশ বলেন পড়া যাবে না।
১) যারা পড়া যাবে বলেন তাদের যুক্তি হল ফজর এবং আসর পরে কোন নামাজে নেই। এই মর্মে যে হাদিস আছে এই ’নেই’এর অর্থ হল শরিয়ত কর্তিক দার্যকৃত কোন নামাজ নেই (যেমন জোহর এর পরে দুই রাকাত, মাগরিবের পরে দুই রাকাত, এশার পরে দুই রাকাত এরকম দার্যকৃত নামাজ ফজর এবং আসরের পরে নাই)। তাদের মত হল ফজরের নামাজের পর সূর্য উদিত না হওয়া পর্যন্ত এই সময়টুকুর মধ্যে অন্য ছুটে যাওয়া নামাজ পড়তে পারেন (যেমন কাযা নামাজ,ফজরের সুন্নত, নফল নামাজ)।
২) যারা বলেন পড়া যাবে না তাদের যুক্তি হল ফজর এবং আসর পরে কোন নামাজে নেই। এই মর্মে যে হাদিস আছে এই ’নেই’এর অর্থ হল একবারে কোন নামাজ সূর্য উদিত না হওয়া পর্যন্ত পড়তে পারবে না (যেমন জোহর এর পরে দুই রাকাত, মাগরিবের পরে দুই রাকাত, এশার পরে দুই রাকাত,কাযা নামাজ,ফজরের সুন্নত, নফল নামাজ ইত্যাদি )।
আসরের পর কোনো নামায নাই সূর্যাস্ত না হওয়া পর্যন্ত এবং ফজরের পর কোনো নামায নাই সূর্য উদিত না হওয়া পর্যন্ত। (মুসলিম : ১৭৯৬)
কেউ যদি (ফরযের পূর্বে) ফজরের দুই রাকআত আদায় না করে থাকে, তবে সে যেন সূর্যোদয়ের পর তা আদায় করে। (তিরমিযী : ৪২৩; ইবনু খুযাইমা : ১১১৭; ইবনু হিব্বান : ২৪৭২)
ফজরের সুন্নাত ছুটে গেলে এক্ষেত্রে যেহেতু ইসলামিক স্কলারদের মধ্যে দুইটি মত রয়েছে। তাই আপনার যদি মনে হয় আপনি সূর্য উদিত পর থেকে জোহরেরে আগে ছুটে যাওয়া ফজরের সুন্নাত আদায় করতে পারবেন। তাহলে আপনি সূর্য উদিত পর আদায় করবে এটাই হল উত্তম। আর যদি কোন কারণেূ আপনার মনে হয় সূর্য উদিত হওয়ার পর আদায় করতে পারবেন না। তবে এক্ষেত্রে ফজরের ফরজ নামাজের পর সূর্য উদিত আগে আদায় করে দিতে পারবেন। তবে উত্তম হচ্ছে সূর্য উদিত হওয়ার পর আদায় করা ।
ফজরের সুন্নাত ছুটে গেলে কখন আদায় করতে হয় ভিডিও
হাদীস: হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত) তিনি বলেন রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে বলতে আমি শুনেছি যে ফযরের নামাজের পর কোন নামায নেই যতক্ষন না সূর্য উদয় হয়। (বোখারী শরীফ খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৮২-৮৩, হাদীস নং ৫৮৬)
আল্লাহ আমাদের সবাইকে শরীয়তের সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করার তাওফীক দান করুন। আমিন
Leave a Reply